×
সদ্য প্রাপ্ত:
চকরিয়ায় যুবদলের দ্বি বার্ষিকী কাউন্সিল সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত রাঙ্গাবালীতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি চকরিয়ায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ১ আরোহী নিহত" মহিপুরে চোর চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে আসলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপি নেতা ইব্রাহিম ফরিদপুর বিসিসি ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাথে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির বরগুনা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভায় যোগদান ভান্ডারিয়াকে বাল্য বিবাহ মুক্ত উপজেলা ঘোষনা রাণীশংকৈলে পুষ্টি বিষয়ক সচেতনামূলক ক্যাম্পেইনিং পুষ্টি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরন গাইবান্ধায় পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার, সৎ মা আটক
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৮-১২
  • ৬৯ বার পঠিত
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) চার কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্লট ও ফ্ল্যাট মালিকদের জিম্মি করে বখরাবাজির নির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। তারা ফাইল থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গায়েব এবং আটকে রেখে প্লট ও ফ্ল্যাট মালিকদের জিম্মি করে রাখেন। পরে অবৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। সংস্থাটির ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা শাখায় বছরের পর বছর দায়িত্বে থাকায় তারা এসব অপকর্ম করেন।

সংস্থাটির উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন জাল সার্টিফিকেটে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো সংস্থাটির নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং জাল সনদধারী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। একই এজাহারে উচ্চমান সহকারী মো. আশরাফুল ও মালিকিন নাসিরের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শওকত আহমেদকে নিয়োগের শর্তপূরণ না করা সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে এবং সে বর্তমানে জামিনে আছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রবিধিমালা পাশ কাটিয়ে একজন কর্মচারীর পদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জাগৃক চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. মুনিম হাসান যুগান্তরকে বলেন, তারা সবাই অপরাধী। ইতোমধ্যে একজনকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। আশরাফুল এবং মালিকিন নাসিরকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। শওকত আহমেদকে বরখাস্ত করা হবে। তার বিরুদ্ধে দুদকেও মামলা রয়েছে। জাগৃক-এ কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের হাজারও অভিযোগ। তদন্ত শেষে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

সূত্র জানায়, জাগৃক এর উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন সংস্থাটির মোহাম্মদপুর অফিসে ৭-৮ বছর পাম্প অপারেটর হিসাবে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করতেন। ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হিসাব সহকারী হিসাবে স্থায়ীভাবে চাকরিতে যোগদান করেন। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে সাবেক এক চেয়ারম্যানের সহায়তায় তিনি জাগৃক এর ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা শাখায় অফিস সহকারী হিসাবে বদলি হন। তিনি জাগৃক এর রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং চট্টগ্রাম এলাকার ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা শাখায় এককভাবে দায়িত্ব পালন করেন। অন্য সহকর্মীদের চেয়ে ১৫-২০ গুণ বেশি দায়িত্ব পালন করেন। অফিস আদেশ জারি করে তাকে ১৫-২০ গুণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার সহকর্মী সংস্থাটির হিসাব সহকারী মো. আশরাফুল দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা এবং দেশের সব বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্লটের দায়িত্ব পালন করেন। তার আরেক সহকর্মী মালিকিন নাসির দেশের সব পুনর্বাসন প্লটের দায়িত্বে ছিলেন টানা ১৬ বছর।

সূত্র জানায়, দেলোয়ার হোসেন, মো. আশরাফুল, মালিকিন নাসির এবং শওকত আহমেদ এই চারজন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। তারা সবাই হিসাব সহকারী এবং নিয়ম অনুযায়ী তারা সংস্থাটির হিসাব শাখায় দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু তাদের প্রায় দেড় যুগ ধরে ভূমি ব্যবস্থাপনা শাখায় দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির সাবেক দুই চেয়ারম্যানের মেয়াদে তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। জাগৃক এর প্লটে ভবন নির্মাণ করতে হলে বা ভাঙতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হয়। প্রতিটি ভাঙা-গড়া কাজের অনুমতির জন্য ২-৫ লাখ টাকা করে বখরাবাজি করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের পর ভবনের ফ্ল্যাটগুলোর মালিকের নামে নাম জারির সময় মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা হতো।

কোনো প্লট মালিক যদি তার সম্পত্তি বিক্রি করতে চান তাহলে জাগৃক এর পূর্বানুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিটি সেলস পারমিশন বা বিক্রয় অনুমতি কেইস থেকে নেওয়া হয় ৬-৭ লাখ টাকা। কেউ টাকা দিতে না চাইলেই তার ফাইল গায়েব, ফাইল থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গায়েব করে তাকে জিম্মি করা হয়। তাদের খুশি করতে না পারলে অথবা তাদের সম্মতির বাইরে গিয়ে কোনো কাজই করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্লট কিংবা ফ্ল্যাট মালিকরা তাদের চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য হয়েছেন।

সূত্র জানায়, নামে-বেনামে তারা বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক। দেলোয়ার রাজধানীর লালমাটিয়ায় ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। একই সঙ্গে তিনি একটি সরকারি কোয়ার্টার বরাদ্দ নিয়ে ভাড়া দিচ্ছেন। তিনি এইচআই টেকনোলজি নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানি গড়ে তুলেছেন। মোহাম্মদপুর এলাকার জাগৃক এর যেসব প্লটের কাগজপত্রের কিছু ত্রুটি ছিল, সেসব প্লট মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিফটি ফিফটি শেয়ারে এইচআই টেকনোলজি ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য করে। দেলোয়ার হোসেনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির পর রাতারাতি প্লটের কাগজপত্র ঠিক হয়ে যায়। এভাবে দেলোয়ার এবং তার দুই সহযোগী আশরাফুল এবং মালিকিন নাসির শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মালিকিন নাসির যুগান্তরকে বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। তদন্তে দোষী হলে শাস্তি হবে।

সূত্র জানায়, সংস্থাটির অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে ২০০৯ সালে নিয়োগ পান শওকত আহমেদ। চাকরিতে প্রবেশকালে তিনি ১৯৯৪ সালে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে তৃতীয় বিভাগে আলিম পাশের সনদ জমা দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ কারও আবেদন করার সুযোগই ছিল না। সম্প্রতি এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে শওকত আহমেদকে দেওয়া বেতন ভাতার ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শওকত আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, আমি বিভাগীয় প্রার্থী। নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এমন একটি ক্লোজ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ছিল। দুর্নীতির বিষয়ে শওকত আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি কোনো দোষ করিনি।

সংস্থাটির অপর এক কর্মচারী মোস্তফা কামালের পদনাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তাকে হিসাব সহকারী থেকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পদায়ন করা হয়েছে। সংস্থাটির চাকরি প্রবিধিমালার ২৭ ধারা মোতাবেক তার পদের নাম পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই তার পদের নাম পরিবর্তন করা হয়। মোস্তফা কামালের সঙ্গে ২০০৯ সালে সংস্থাটিতে ২০ জনের হিসাব সহকারী হিসাবে নিয়োগ হয়েছে। শুধু মোস্তফা কামালের পদনাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়ে মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে বলেন, একই বেতনে এবং স্কেলে পদনাম পরিবর্তনে কোনো সমস্যা নেই। কোনো অনিয়ম হয়নি। অন্যদের পদনাম পরিবর্তন কেন হলো না জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat