ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে অবৈধ গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং ও ফরেক্সের মতো আর্থিক অপরাধের বিস্তার ঘটছে।
অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সভা করেছে বিএফআইইউ।
সভায় বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস সব সংস্থাকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি সংস্থাগুলোর মধ্যে কাজের সমন্বয় সাধন ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ তথ্য ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন দিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সভায় অন্য সংস্থাগুলো আগামী দিনে একযোগে কাজ করে অবৈধ হুন্ডি, অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্রতিরোধের প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি), বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রান্সন্যাশনাল অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম বিভাগ এবং গোয়েন্দা ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগ। এই বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক খাতে ডিজিটাল লেনদেন ও স্মার্ট লেনদেনের ব্যবহার বেড়েছে, যার সুফল ভোগ করছে পুরো বাংলাদেশ। তবে সুফল ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি এসব ব্যাংকিং ও লেনদেন পদ্ধতির অপব্যবহারও বেড়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও লেনদেন সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন আর্থিক অপরাধ বিস্তার লাভ করেছে। এর মধ্যে অনলাইনে অবৈধ গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিং উল্লেখযোগ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত এসব অপরাধের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেনের মাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল লেনদেন পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে এসব অপরাধ হুন্ডি প্রক্রিয়াকে সহজ ও ত্বরান্বিত করছে। এর ফলে মুদ্রা পাচার বেড়ে যাচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশ প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ হুন্ডি তথা অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার রোধসহ সব ধরনের অর্থ পাচার রোধে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
এসব অপরাধ প্রতিরোধে বিএফআইইউ সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়া বিএফআইইউ প্রতিনিয়ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন সরবরাহ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি এ–সংক্রান্ত ওয়েবসাইট, অ্যাপ, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব লিংক চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..