রুবেল হোসেন, বাউফল
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া বন্দরের ধানহাট ট্রাক স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে আবারও বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এর আগে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে ট্রাক স্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ওই সময় দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় শনিবার রাতে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন ২১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনের নামে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন (ট্রাক, পিকআপ, লরি) ও পটুয়াখালী পায়রা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড থেকে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তিন বছর মেয়াদে কালাইয়া বন্দর ধান হাট ট্রাক স্ট্যান্ড কমিটি দেওয়া হয়। ২৬ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির সভাপতি হলেন আশরাফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন।
দলীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দাসপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম চৌধুরীর পক্ষের লোকজন ওই কার্যালয় ও স্ট্যান্ড একাধিকবার দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিএনপি নেতা আলী আজমের লোকজন দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই কার্যালয় ও স্ট্যান্ড দখল করতে যান। তখন আরিফ ও তাঁর লোকজন বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে বিএনপি নেতা আলী আজমের লোকজন ওই কার্যালয় ও স্ট্যান্ড দখল করে নেন। দখল হটাতে যুবদল নেতা আরিফ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দলবল নিয়ে স্ট্যান্ডের দিকে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করেন আলী আজমের লোকজন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত মো. আবু তাহেরকে (২৭) বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা তাসনিন তানজিলা ইসলাম বলেন, আবু তাহেরের ডান হাতর তিনটি আঙুলে কোপ রয়েছে। এর মধ্যে একটি আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্ট্যান্ড পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন বলেন, বিএনপি নেতা আলী আজমের পক্ষে কোনো কাগজপত্র নেই। তিনি গায়ের জোরে স্ট্যান্ড দখল করে নেন। তাঁরা সেখানে গেলে আলী আজমের লোকজন হামলা চালিয়ে তাঁদের লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে আইনি সহায়তা চেয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে দাসপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম চৌধুরী বলেন, তাঁর লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। শুনেছেন, আরিফ লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। যিনি (আরিফ) অভিযোগ দিয়েছেন, তিনি বিএনপির কেউ নন। বিগত দিনে তিনি যুবলীগ নেতার দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেছেন। এখন বিএনপিতে সুকৌশলে অনুপ্রবেশ করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাঁকে ও বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করছেন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রথম ঘটনায় এক পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..