মোঃ নাজমুল হুদা, লামা
বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের পাহাড়ি জনপদে হচ্ছে নান্দনি সড়ক নেটওয়ার্ক । এই সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরী ফলে পাহাড়ের কৃষি ও অকৃষি পণ্যের পরিবহন ব্যয় কমবে। এর ফলে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলার পাহাড়ে এই সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি করছে "পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড"।
সূত্র জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিন জেলা ঘিরে গ্রামীণ জনসাধারণের কৃষি ও অ-কৃষি খাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়ারী কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদনে এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণে সহযোগিতা ও পর্যটন খাতে উন্নতি সাধন, পল্লী এলাকার দুস্থ নারীদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা এবং পল্লী এলাকায় জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানোর লক্ষ্যে উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই উদ্দেশ্যে প্রথম অংশ চিওরতলী বাজার হতে মনিন্দ্র পাড়া পর্যন্ত ০০ হতে ২ কিলোমিটার চেইনিজ দুই কিলোমিটার ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে মেসার্স ইউটি মং পাহাড়ি। প্রকল্পের আওতায় ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তাটির দৈঘ্য ১২ ফুট। ইউনিয়ন সড়ক ও গ্রাম সড়কের উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পটি ২০২৩-২৪, ২০২৪ -২৫ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপিত হবে।
সম্প্রতি সরেজমিনে জানা যায়, লামার ফাইতং ইউনিয়নর (১ নং ওয়ার্ড) এ কার্পেটিং রাস্তার ফলে যোগাযোগ সুবিধার আওতায় আসছে চিওরতলী পাড়া,জামিলা পাড়া,মাইনকাটা,মল্যারঝিরি,ঠান্ডারঝিরি,মালিচান,সোনাইছড়ি, বাঙালি পাড়া কয়েকটি গ্রাম। আরও কয়েকটি গ্রাম হয়ে গরু বাজার হয়ে ফাইতং ইউনিয়নের কয়েকটি আন্তঃ সড়ক যোগাযোগের নতুন মাত্রা সৃষ্টি হবে। হাইওয়ে রাস্তা হয়ে সহজেই মেইন হয়ে আজিজনগর ইউনিয়ন সাথে সহজেই কানেক্টিভিটি হবে। দুই কিলোমিটার প্রথম দুই কিলোমিটার কার্পেটিং এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যা প্রান্তিক জনপদের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান, ধর্মচরণ ত্রিপুরা,মৌঃ নুরুল করিম সরোয়ার আলম,রবিউল হোসেনসহ কয়েকজনের সাথে কথা হয় তারা বলেন, অনেকদিন পর আমাদের দূভোর্গের শেষ হবে। এই কার্পেটিং রাস্তার হওয়ায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল, মাদ্রাসায় সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। পাশাপাশি এলাকার কৃষি ও অকৃষি পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
স্থানীয় ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মেহেরাজ উদ্দীন বলেন, এটির আমাদের এলাকার অনেক দিনের প্রত্যাশা ছিল। এটির বাস্তবায়নের ফলে এলাকার জনসাধারণ উপকৃত হবে।
বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোঃ ইয়াছিন জানান, গ্রামীণ সড়ককে দুর্যোগ সহনীয় দুই লেন সড়কে উন্নীতকরণ, গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ বা পুনর্বাসন, ইউনিয়ন সড়কের ইন্টারসেকশন নিরাপদকরণ, গ্রোথ সেন্টার উন্নয়ন, বাজার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২ নম্বর অনুযায়ী টেকসই কৃষির প্রসার এবং অভীষ্ট ৯ এ অভিঘাতসহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিল্পায়নের কথা উল্লেখ রয়েছে। এটি ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ এবং এসডিজি’র লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
এ জাতীয় আরো খবর..