×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-৩০
  • ৫ বার পঠিত
মোঃ রাফসান জানি,  ভোলা :ভোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস ও সিএনজিচলিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনেও উত্তেজনা বিরাজ করছে বুধবার (২৯ জানুয়ারি)  দ্বিতীয় দিনে বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩টি সিএনজিতে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং আরও ৪ টি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিচিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, র‍‍্যাব মোতায়েন রয়েছে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ভোলার অভ্যন্তরের অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তারা বিকল্প পরিবহণ হিসেবে চলাচলের জন্য ব্যাটারী চালিত অটো রিকশার মাধ্যমে চলাচল করছে। বাস মালিক সমিতির নেতারা বলছেন প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত এই ঘটনার সমাধান করা হলেই তারা বাস চলাচল স্বাভাবিক করবেন।

আর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভোলায় বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে   থেকে থেমে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ আহত হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ জনকে বরিশাল প্রেরণ করা হয়েছে। দুই দফায় পুড়ে গেছে ৯টি সিএনজি ও ২ টি বাস। ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ৩০ টি সিএনজি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে বুধবার সকালে পুনরায় বাস টার্মিনালে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এ সময় তারা সিএনজি মালিকদের অন্তত আরো ৪টি সিএনজিতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভোলা বাস টার্মিনালের সামনে সিএনজি যেন কোন ভাবেই অবস্থান নিতে না পারে তার দাবী জানিয়েছেন। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সিএনজি ও বাস মালিকদের মধ্যে সিএনজি চলাচল এবং স্টান্ড্যান্ডে অবস্থান নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় এবং এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রথমে ইট পাটকেল নিক্ষেপ দিয়ে শুরু হলেও পরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বাস ও সিএনজি শ্রমিকরা। এ ঘটনায় দুই বারে ৯টি সিএনজি ও ২টি বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ৩০টি সিএনজি ও ১০টি বাস। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনী, র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিএনজি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন বলেন, মঙ্গলবার রাতে বাস মালিক সমিতি পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে অন্তত ৩০টি সিএনজি ভাংচুর করে এবং ৫টিতে আগুন দেয়। আমাদের গাড়ীতে আগুন দেয়ার আগে তারা তাদের বাসগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। ওই সময় আমরা ফায়ার সার্ভিসকে ডাকাডাকি করার পরেও তারা গেট বন্ধ করে রাখে এবং আমাদের সিএনজির আগুন নেভায় নাই। পুনরায় আজ বুধবার আবার তারা আমাদের সিএনজিতে আগুন দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।

ভোলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা জানান, পৌর সভার নির্দেশ অনুযায়ী সিএনজি মালিকদের আমরা স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি সরিয়ে নিতে বলেছি। এ কারণে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদের বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে মঙ্গলবার রাতে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুনরায় আজ বুধবার আবার দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আমরা এই বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়ে বলেছি দুই গ্রুপকে একত্রিত করে সৃষ্ট ঘটনার সমাধান করে দেয়ার জন্য।

ভোলা ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, গতকাল মঙ্গলবার যে ঘটনা ঘটেছে সেই সময় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। আমরা সতর্ক এবং সজাগ ছিলাম বুধবারও এ ধরনের কোন অহিংস ঘটতে পারে। বুধবার আন্দোলন চলাকালে কে বা করা সিএনজিতে আগুন দিয়েছে তা আমরা দেখি নাই। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসার চেষ্টা করি, কিন্তু উত্তেজিত জনতার কারণে আমাদের ঘটনাস্থলে আসেতে দেরী হয়। পরবর্তীতে কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনীর সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সরকার বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটেছে। গতাকল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাস ও সিএনজি মালিকরা তাদের শ্রমিকদের সরিয়ে দিয়ে বাস টার্মিনাল খালি করে। উভয়পক্ষই আমাদেরকে কথা দিয়েছিল কেউ কারো কোন ক্ষতি করবে না। কিন্তু কে কার কথার উস্কানিতে আজ পুনরায় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সিএনজিতে আগুন দিয়েছে তা জানি না। আমরা বাস মালিক সমিতির শ্রমিকদের প্রসমিত করার চেষ্টা করছি। কোন পক্ষই এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় নাই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat