×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-১৮
  • ২৩ বার পঠিত
আব্দুল মজিদ ঠাকুরগাঁও থেকে
মাঘ মাসের এক শীতল সকালে, কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ঠাকুরগাঁওয়ের প্রাঙ্গণে কেটে গেল এক আবেগঘন দিন। এটি   ছিল দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক  কর্মকাণ্ডের বাইরে মুক্তির ,শেকড়ের টানে, বন্ধুত্বের গভীরতার এক অসাধারণ দিন উদযাপনের। এমন একটি দিনে জীবন যেন ফিরে গেল শৈশবে, সেই পুরোনো দিনের মধুর স্মৃতিতে। জাতীয় রাজনীতির অঙ্গনের উজ্জ্বল মুখ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্যোগে এই আয়োজন হয়ে উঠেছিল আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও স্মৃতিচারণের এক অনন্য উপলক্ষ।দেখলো অন্য এক মহাসচিবকে ও পরিছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে । সকাল দশটায় আয়োজন শুরু হলেও অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় মুহূর্তটি হয়ে উঠেছিল স্মরণীয়। ঢুকতেই সাদা কাপড়ের প্যান্ডেলের অভ্যন্তরে মিলল বন্ধুত্বের গন্ধ। মির্জা ফখরুলের আন্তরিক কণ্ঠস্বর, “বন্ধুরা আয়,” যেন সময়ের দেয়াল ভেঙে সবাইকে একত্র করল। শৈশব, কৈশোরের প্রিয় মুখগুলো যেন পুনরায় জীবন্ত হয়ে উঠল।সবার সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি স্মৃতিচারণে উঠে এল মির্জা ফখরুলের শৈশব-কৈশোরের গল্প। ঠাকুরগাঁও নাট্য সমিতির মঞ্চে তার অভিনয়, ক্রিকেট ক্লাব কূশলীতে তার ব্যাটসম্যানশিপের দিনগুলো যেন ফিরে এল সবার কথায়। আজ পরিত্যক্ত সেই মঞ্চ আর থমকে যাওয়া ক্রীড়াঙ্গনের কথা উঠে এলে কিছুটা বিষণ্ণ হলেও এই মুহূর্তগুলো সবাইকে জুড়ে দিল আরও গভীরভাবে। এই বুঝি বললেন বারেকাল্লার গাউসিয়া হোটেল থেকে খাবারের কথা।কিন্তু স্মৃতি চারনের এই দিনে উঠে আসেনি ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর কলেজ শিক্ষকতা থেকে সরে এসে তার রাজনৈতিক  জীবনে উত্থানে যাদের অবদান তাদের মধ্যে অন্যতম নূর মোহাম্মদ ( মানিক মিঞা) দের কথা। রাজনৈতিক জীবনকে পাশ কাটিয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন সংস্কৃতিমনা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, গল্প, আড্ডায় বিভোর প্রাণচাঞ্চল্য চিরসবুজ এক অন্যরকম অনুভুতির মানুষ। তাকে দেখে মনে হয়েছে একজন অতিসাধারণ মানুষ রূপে। কখনো মনে হয়েছে নবগোপাল সামন্ত বা হবি বাবুর দোকানের সেই আড্ডাটা এখন আবার পুনর্জাগরণ হয়েছে। আরেকটি বিশেষ দিক ছিল সঙ্গীত পরিবেশনা। স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশিত গান ও যন্ত্রসঙ্গীত যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে এক সুরেলা পরিবেশ সৃষ্টি করল। এর মধ্যেই মির্জা ফখরুলের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতার আবৃত্তি সবার মনে ছুঁয়ে গেল। পরে তার ছোট ভাই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক  সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘বোধন’ কবিতার অংশবিশেষ আবৃত্তি করে মঞ্চকে আরও বর্ণিল করে তুলা হলো।দুপুরে  পরিবেশিত হলো সুস্বাদু খাবার। আহারের পরে মজার মজার খেলায় অংশ নিলেন সবাই। পুকুরপাড়ে গল্পের আসর জমে উঠল পুরোনো দিনের সুখস্মৃতিতে। হাসি-আনন্দে ভরা প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক নতুন উদ্যমে ভরিয়ে তুলল সবার মন।
দিনের শেষ প্রান্তে কুয়াশার ফাঁক গলে যখন এক মুঠো রোদ্দুর প্যান্ডেলের ভেতর প্রবেশ করল, তখন ভালোবাসার উষ্ণতায় যেন চারদিক ভরে উঠল। মির্জা ফখরুলের আন্তরিক উদ্যোগে এই মিলনমেলা হয়ে উঠল বন্ধুত্বের মধুরতম উদাহরণ।এই দিনটি স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকবে। শেকড়ের টান, বন্ধুত্বের উষ্ণতা, এবং আন্তরিকতার এমন মিলনমেলা প্রমাণ করে—সময় যতই পেরিয়ে যাক, শেকড়ের টান কখনোই হারায় না। বরং তা হয়ে ওঠে আরও মধুর, আরও অমূল্য। ঠাকুরগাঁওয়ের এই দিনটি ছিল সেই সত্যেরই উদাহরণ। 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat