×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-০৭
  • ৪২ বার পঠিত
আব্দুল মজিদ ঠাকুরগাঁও থেকে:
ঠাকুরগাঁও শহরের অফিসপাড়া—যেখানে দিনের আলোয় কর্মব্যস্ত মানুষদের পদচারণায় সরব থাকে এলাকা। অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের কোলাহলে জায়গাটি থাকে মুখরিত। তবে রাতের পরিপ্রেক্ষিত সম্পূর্ণ আলাদা। দিনের কর্মচাঞ্চল্য শেষ হলে এই অঞ্চল হয়ে ওঠে ছিন্নমূল মানুষের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়। শীতের রাতে এই স্থান যেন তাদের জীবনযুদ্ধের নীরব সাক্ষী।

এমনই এক গল্প ছিন্নমূল বৃদ্ধা অবেদার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ, পঙ্গু এই নারী সারাদিন ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করে যা সামান্য চাল সংগ্রহ করেছেন, তা-ই তাকে জীবিত রাখার একমাত্র অবলম্বন। দিনের শেষে, শীতল বাতাসের মাঝে তিনি একটি ছোট হাঁড়িতে চাল দিয়ে রান্না করছেন। তার শীর্ণ শরীর, ক্লান্ত চোখ-মুখ, আর কাঁপতে থাকা হাত যেন প্রকাশ করে জীবনের কঠোর বাস্তবতা।

অবেদার সঙ্গে রয়েছেন সখিনাসহ আরও কিছু ছিন্নমূল মানুষ, যারা দিনের শেষে ফুটপাতকেই বেছে নিয়েছেন রাতের আশ্রয় হিসেবে। কেউ পলিথিনের নিচে, কেউ পুরোনো কাঁথায় নিজেকে জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তাদের জীবন যেন এক অনবরত সংগ্রাম।

অবেদার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের শীতে এখনো কেউ একটি গরম কাপড় বা কম্বল পর্যন্ত দেননি। অথচ রাতের তীব্র ঠান্ডায় বেঁচে থাকাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ। তার কথায় ফুটে ওঠে এক কঠিন সত্য, “পেট ভরে খেতে পাই না, তবু সবার দয়া চাইতে হয়। এই শীত আমার জন্য শেষ শীত কিনা, জানি না।”

অফিসপাড়ার আশেপাশে থাকা আরও কয়েকজন ছিন্নমূল মানুষের একই অভিযোগ। তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানো হয় না বললেই চলে। তারা আশা করেন, সমাজের বিত্তবানরা তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াবেন।

এই শীতে ঠাকুরগাঁওয়ের অফিসপাড়ায় ছিন্নমূল মানুষের এমন অসহায় চিত্র কেবল তাদের নয়, বরং আমাদের সমাজের এক নির্মম বাস্তবতাকেই তুলে ধরে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উচিত তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো, যাতে অন্তত শীতের রাতগুলো তাদের জন্য একটু সহজ হয়ে ওঠে। 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat