মল্লিক মাকসুদ আহমেদ বায়েজীদ, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী):
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-বরগুনা মহাসড়ক।
আর এই মহা সড়কের অন্যতম ব্যস্ততম স্থান রানীপুর পূর্বদেউলী চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ড। এর উপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস,মাহেন্দ্র,সিএনজি,অটোরিক্সা,মালামালবাহী কাভারভ্যান,ট্রাক,পিকঅাপ,সিনজি চালিত গাড়ি,অটোরিক্সা,মোটর সাইকেল ইত্যাদি যাতায়াত করে।
সরেজমিনে দেখা যায়,এই চৌরাস্তায় রয়েছে বাজার,কয়েকটি বাস কাউন্টার,মসজিদ। বরিশাল-ঢাকার পথে কয়েক মিটার উত্তরে
দেউলী ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতাল,তার কয়েক গজ সামনে খালের ওপারে রানীপুর বাজার,এর ঘেঁষা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মসজিদ। এগুলো সবই মহাসড়কের পাশে। চৌরাস্তার পশ্চিম দিকের সড়ক ধরে পাঁচশত মিটারের মতো সামনে দেউলী বাজার ও পল্লী মঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার সাথে মির্জাগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। চৌরাস্তার দক্ষিণ দিকের মহাসড়ক ধরে বরগুনা যেতে হয়। পূর্ব দিকের রাস্তা পৌঁছেছে পায়রা নদীর পাড় ধরে একাধিক ওয়েতে।
স্থানীয়রা জানান,বরগুনা ঢাকা মহাসড়কের অন্যতম ব্যস্ততম এই জায়গাটি মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাই দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এখানে অন্ততপক্ষে গতিরোধক নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা।
রানীপুরের মোঃ বাবুল মুন্সি জানান,এই চৌরাস্তার উপর দিয়ে গমনকারী সকল ধরণের যানবাহন চলাচল করে যথাযথ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে। সরকারি বিধি বিধান পকেটে রেখে খামখেয়ালিপনা গতিতে চলা যেন এসব চালকদের নেশা। এখানে কেউ ধার ধরেনা ট্রাফিক আইনের। গত ২৫ জুন,বুধবার,এশার নামাজের পরে একটি অটো রিক্সা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা ওঠে সিকদার মার্কেটের মোঃ জলিল সিকদারের দোকানে। মার্কেট মালিকানায় নির্মাণকৃত পিলারে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায় গাড়িটি। ড্রাইভার সহ কয়েকজন বেশ আহত হয়। গাড়ির তলে পরে ক্ষয় ক্ষতি হয় কমপক্ষে দশ হাজার টাকার মালামাল।
স্থানীয় মোঃ শহিদুল ইসলাম (মাস্টার) জানান,এরকম দুর্ঘটনা অহরহ ঘটেই যাচ্ছে। ২০২০ সালে দ্রুতগামী একটি মাোটর সাইকেল উঠিয়ে দেয় আমেলা বেগম নামক এক মহিলার গায়ের উপর। সে ওই স্থানেই মারা যায়। আমেলা বেগম পূর্ব দেউলীর মৃত খানজে মল্লিকের সহধর্মিণী ছিল। আবার গত বছরে ৫৫ বছর বয়সী এক মহিলাকে পিষে যায় একটি মোটর সাইকেল। তিনিও ঘটনাস্থলেই মারা যান। সাতবাড়িয়া গ্রামের আজিজ খানের সহধর্মীণি ছিলেন তিনি। মোঃ শহিদুল ইসলাম আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এ জায়গাতো মৃত্যু ফাঁদ। আর কত প্রাণ ঝড়লে টনক নড়বে সবার।
দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন এবং দাবি করেন এখানে অতি সত্বর গতিরোধক নির্মাণ করার। তিনি বলেন,সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই স্থানটিতে জনসমাগম থাকে এবং সড়কগুলিও থাকে অতি ব্যস্ত। অথচ এসব সড়কে নেই কোনও গতিরোধক। পাশাপাশি এই পথে বেশ কয়েকটি বিপদজনক বাঁক থাকলেও নেই নির্দেশক চিহ্ন বা কোনো সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা। তাই এই সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলো এক প্রকার আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার জন্য।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম আশ্বস্ত করেন, সড়ক ও জনপথের সংশ্লিষ্ট সহ উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে তিনি বিষয়টি অবহিত করবেন। তিনি বলেন, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে গতিরোধক নির্মাণ করা হয়,সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..