ইব্রাহিম মুকুট, ময়মনসিংহ: ঈদুল আযহা-২০২৪ইংল উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া মিলিয়ে নিরাপদ গবাদি পশুর সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮০টি। এ বিভাগে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর চাহিদা প্রায় ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৬টি এবং উদ্ধৃত্ত ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৮৪টি।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বিভাগে গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮৯টি এবং চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭৯টি পশু অতিরিক্ত ছিল।এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় কোরবানির জন্য ২ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯২৬টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা রয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৯৮টি। ষাড়, বলদ ও গাভী মিলিয়ে মোট কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ৮৪ হাজার ৬টি এবং মহিষ ১ হাজার ৮৪১টি, ছাগল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭০২টি ও ভেড়া ৭ হাজার ৩৭৭টি।নেত্রকোনা জেলার কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গবাদি পশুর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৮৮২টি এবং চাহিদা রয়েছে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩৮৮টি।
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে জামালপুর জেলায় গবাদি পশুর সংখ্যা রয়েছে ৯৫ হাজার ১৭০ টি ও চাহিদা আছে ৫১ হাজার ৫৩১ টি এবং শেরপুরে গবাদি পশুর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮০২ টি ও চাহিদা আছে ৫৭ হাজার ৫৭৯টি।
প্রাণিসস্পদ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক ডা. মনোরঞ্জন ধর বলেন,ময়মনসিংহসহ বিভাগের চার জেলায় খামারি এবং কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য ৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮০টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় ১ লক্ষ ৬৭ হাজারের বেশি। এবারও ক্রেতাদের চাহিদা এবং সুবিধার কথা চিন্তা করে পশুর হাটের পাশাপাশি অনলাইনে গবাদিপশু কেনাবেচার মাধ্যম রাখা হবে। হাটগুলোতে থাকবে প্রাণিসম্পদের ভেটেনারি মেডিকেল টিম। তাই আশা করা যায়, খামারিরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।
বিভাগীয় পরিচালক আরও বলেন, বর্তমানে তাপপ্রবাহের কারণে গবাদিপশু যাতে অসুস্থ না হয় সেজন্য আমাদের টিম সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছে। মাঠ পর্যায়ে খামারিদের নিয়ে এই তাপ প্রবাহ মোকাবিলা করার জন্য তাদের মধ্যে ব্যানার, ফেষ্টুন বিলি করা হচ্ছে, যাতে করে পশুদের এই গরমে সহনীয় পর্যায়ে সুস্থ রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। গবাদিপশু বা পোল্টির ঘর শীতল রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এজন্য শেডের চালে ভেজা চট,বস্তা বা কাপড় বিছিয়ে দিলে ঘরের ভিতর তাপমাত্রা কমাতে তা সাহায্য করবে বলে জানান। ঘরের ভিতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে ফ্যান ব্যবহার করা,একাধিকবার গোসল করানো, পাইপের সাহায্যে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেয়া এবং গবাদিপশু বা পোল্টিকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। দিনের অতিরিক্ত গরমের সময় খাদ্য সরবরাহ কম করা, প্রচন্ড গরমে পারতপক্ষে কৃমিনাশক ব্যবহার বা টীকা প্রদান ও পরিবহন পরিহার করতেও পরামর্শ দেন। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে বলেন। সেডের উপরে সরাসরি সূর্যের তাপ প্রতিরোধে রঙিন পলিথিন বা সামিয়ানার মত টাঙ্গিয়ে দিতে মতপ্রকাশ করেন।বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ মনোরঞ্জন ধর আরও বলেন খামারীরা যেন ঘাস,খের ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে গরুর যত্ন করে কোন অবস্থাতেই যেন অল্প সময়ে গরু স্বাস্থ্যবান করতে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন না করে সে বিষয়ে খামারীদের এবং জেল-উপজেলা পর্যায়ের কর্নকর্তাদের পরামর্শ দেন।
পশুপালন খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পশুখাদ্যের কিছু উপকরণের দাম বেড়ে এখন দ্বিগুণের বেশিতে। আবার ওষুধ, বিদ্যুৎ, কর্মচারীদের বেতনসহ সার্বিক উৎপাদন ব্যয় বাড়াতে হয়েছে খামারিদের। এর ধারাবাহিকতায় এবার গত বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর দাম একটু বাড়তে পারে। খামারিদের আশা গতবারের তুলনায় কোরবানির হাট জমজমাট হবে এবং ভালো দামের আশা করছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..