সরকার তাদের অপকর্ম ঢাকতে গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশে এত গণমাধ্যম কিন্তু তাদের স্বাধীনতা নেই। চাইলেও তারা সব সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না।
আজ সোমবার গুলশানে হোটেল লেকশোরে বিএনপির উদ্যোগে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম : দুঃশাসনের দেড় দশক শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের চেয়ারপারসনের উপদষ্টো কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ। সেমিনার উপলক্ষে গণমাধ্যমের ওপরে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দুঃশাসনের দেড় দশক (২০০৯-২০২৩) শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছে, জাতীয় সংসদ, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন, বিচারবিভাগ ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করেছে।
সরকার পুরো সমাজটাকে নষ্ট সমাজে পরিণত করেছে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও বলতে হচ্ছে যে দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। গণমাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজ করতে পারছে না।
দেশে এখানে সুকেৌশলভাবে একটা করপোরেট মিডিয়া তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়। আবার গণমাধ্যমের যদি স্বাধীনতা না থাকে তাহলে কাজ করতে পারে না।
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বহির্বিশ্বে আজ পরিস্কার করে বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। তারা পরিস্কার করে উচ্চারণ করছে এখানে নির্বাচন হয় না, এখানে বলছে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ করছে সরকার। ভয়ের সংস্কৃতি চালুর পর সংবাদপত্রে এখন রাজনৈতিক কার্টুন দেখা যায় না। সরকারের সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে বরেণ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত দেড় দশকে বর্তমান সরকারের সময়ের ৮টি আইনের কথা উলে্লখ করে সেগুলোকে গণমাধ্যমবিরোধী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণমূলক বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম, জামালপুরে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানীর কন্যা রাব্বাতুন জান্নাত বক্তব্য রাখেন। বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ ও যুগান্তরের সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামালও বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্ব ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের পরিচালনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নূর, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ আখন্দ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ জাতীয় আরো খবর..