×
সদ্য প্রাপ্ত:
লাখো মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় চিরনিন্দ্রায় সমাহিত শায়খুল হাদীস আল্লামা মুকাদ্দাস আলী ফেনীতে জুয়া'র টাকার জন্য শিক্ষার্থীর হাতে গৃহকর্মী খুনঃ গ্রেপ্তার আসামি গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ৩০০ কম্বল পেলেন শীতার্ত মানুষ কয়রায় মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের তৎপরতা, বিশেষ অভিযানে গাঁজা ও ইয়াবাসহ ৪ জন আটক রাণীনগরে রূপালী ব্যাংকে মতবিনিময় সলঙ্গায় ঔষধের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে অর্থদণ্ড ২০২৫ সালের প্রথম মাসে গণমানুষের প্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি এবার ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর অভিযোজন অধিকার অংশীজন সংলাপ অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহরে ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে শীতার্ত মাঝে শীত বস্ত্র বিতরন ১০ বছরেও ঢাকায় যায়নি, ৭৭ বছর বয়সি বৃদ্ধসহ একই পরিবারের তিনজন ঢাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামী
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-০৮
  • ৭ বার পঠিত
জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি: সুদীর্ঘ ৭০ বছর ধরে হাদীসের দরস দানের বিরল কৃতিত্বের অধিকারী, উপমহাদেশের প্রখ্যাত শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা মুকাদ্দাস আলী বুধবার সকাল ৮ টার সময় জকিগঞ্জ উপজেলার বারগাত্তা গ্রামের বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৯২ বছর। আজ বিকাল ৪ টা ৩০ মিনিটের সময় জকিগঞ্জ উপজেলার সোনাসার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।

নিজের এলাকার মানুষের কাছে ‘মাটিয়া ফেরেশতা’ নামে মশহুর ছিলেন শায়খুল হাদীস মুকাদ্দাস আলী। একদিকে যেমন ইলমে হাদিসের ওপর অগাধ পাণ্ডিত্য, অন্যদিকে নিভৃতচারিতা ও বুজুর্গিতে অতুলনীয় ছিলেন সিলেটের জকিগঞ্জ এলাকার ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর কাছে। টানা ৭০ বছর ধরে দেশের সীমান্ত অঞ্চল সিলেটের জকিগঞ্জে নিভৃতে বসে হাদিস শরিফের দরস প্রদান করে গেছেন। বাংলাদেশে একাধারে এত দীর্ঘকাল হাদীসের দরস প্রদানের সৌভাগ্য আর কোনো শায়খুল হাদিসের হয়নি বলে অভিমত বিজ্ঞজনদের। কেউ কেউ বলছেন পুরো উপমহাদেশেও দ্বিতীয় কোনো মনীষী নেই এমন, যিনি এত দীর্ঘকালব্যাপী বুখারির দরস প্রদান করেছেন।

১৩৭৭ হিজরিতে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে পড়াশোনা শেষ করে পরের বছর ১৩৭৮ হিজরিতে মাওলানা মুকাদ্দাস আলী নিজের এলাকা সিলেটের জকিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ফয়েজেআম মুনশীবাজার মাদরাসায় দরসে বুখারির উস্তাদ হিসেবে নিয়োগ পান। তারপর থেকে এখানেই তিনি একাধারে ৭০ বছর যাবত বুখারি শরিফের দরস দিয়ে আসছেন। মাঝখানে একবার দু’বছরের জন্য সিলেটের আঙ্গুরা-মুহাম্মদপুর মাদরাসায় শায়খুল হাদিস হিসেবে ছিলেন, তারপর আবার ফিরে আসেন মুনশিবাজারে।

জকিগঞ্জ উপজেলার ‘বারগাত্তা’ গ্রামে ১৩৪০ বঙ্গাব্দের ২০ চৈত্র (হিজরি সন আনুমানিক ১৩৫২, ইংরেজি ১৯৩৩) তারিখে তাঁর জন্ম। ছেলেবেলা বাবাকে হারান, মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে প্রথমে ফুফুর কাছে, তারপর নানার কাছে লালিত-পালিত হন। মা-বাবাহীন শৈশব-কৈশোরের নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে মাওলানা মুকাদ্দাস আলী জালালাইন পর্যন্ত পড়াশোনা করেন সিলেট অঞ্চলের কয়েকটি মাদরাসায়। সিলেটে তখন শায়খুল ইসলাম সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানি রহমতুল্লাহ আলায়হির তুমুল জনপ্রিয়তা। মাদানী ছাহেবের বেশ কয়েকজন খলিফার সাহচর্য ও শিষ্যত্ব লাভ করার সৌভাগ্যও অর্জন করেছিলেন তিনি জালালাইন পর্যন্ত পড়তে পড়তে।

জালালাইন শেষ করে ১৩৭৪ হিজরিতে পাড়ি জমান ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের উদ্দেশ্যে। দেওবন্দে তিন বছর ‘ফুনুনাত’ পড়ে ১৩৭৭ হিজরিতে ভর্তি হন দাওরায়ে হাদিসে। বুখারি শরিফের দরস ও সনদ গ্রহণ করেন হজরত ফখরুদ্দিন মুরাদাবাদী রহ.-এর কাছ থেকে। কারী তৈয়্যব (রহ) তখন মুআত্তান পড়ান। তাঁর কাছ থেকে মুআত্তানের ইজাজত পান।

মাওলানা মুকাদ্দাস আলী যে বছর দাওরা পড়েন, তার মাত্র বছর দুয়েক আগে সৈয়দ হোসাইন আহমদ মাদানীর ইন্তেকাল হয়। তাই বুখারি শরিফের দরস মাদানী ছাহেবের কাছ থেকে আর নেওয়া হয়নি তাঁর। তবে দেওবন্দে দাওরা পরীক্ষার পর মাজাহেরুল উলুম সাহারানপুর গমন করে কিছুদিন শায়খুল হাদিস জাকারিয়া রহমতুল্লাহ আলায়হির সাহচর্য নেন এবং তাঁর কাছ থেকে বুখারি শরিফের লিখিত ইজাজত লাভ করেন।

কিংবদন্তীতুল্য একজন শায়খুল হাদিস হবার পাশাপাশি মাওলানা মুকাদ্দাস আলী উঁচুমাপের একজন বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানি রহমতুল্লাহ আলায়হির অন্যতম খলিফা কায়েদে উলামা হজরত আবদুল করীম শায়খে কৌড়িয়া রহমতুল্লাহ আলায়হির অন্যতম খলিফা ছিলেন তিনি। প্রতিবছর রমজানের শেষ দশকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন জকিগঞ্জ ছুটে আসতো তাঁর সাহচর্যে  থেকে এতেকাফ করার জন্য।

আধ্যাত্মিক তরিকায় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিত্বকে তিনি খেলাফত দান করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়ার শায়খুল হাদিস আল্লামা শফিকুর রহমান কিশোরগঞ্জী । শফিকুর রহমান কিশোরগঞ্জী  জালালাবাদী প্রতিবছর রমজানের শেষ দশকে কিশোরগঞ্জ থেকে ছুটে আসতেন তাঁর শায়খের সাহচর্যে এতেকাফের জন্য।

তাছাড়া জকিগঞ্জের মুনশিবাজার মাদরাসা মসজিদে খানেকা পরিচালনা করতেন তিনি। আর খানকার পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ছিলেন শাযখুল হাদীস আল্লামা মুকাদ্দাস আলী (রহ)।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat