একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের চকরিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা দুটি মামলায় চার সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল ফোরকান ১৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং দুই থেকে তিন হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দুটি করেন। একটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং অপরটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়েছে।
এসব মামলায় দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি আবদুল মজিদ, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও পূর্বদেশ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি এ কে এম ইকবাল ফারুক, কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার সংবাদ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি এ কে এম বেলাল উদ্দিন এবং দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার উপকূলীয় সংবাদদাতা এ এম ওমর আলীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ওমর আলী চকরিয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি।
সাংবাদিক এ কে এম ইকবাল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৫ বছর ধরে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছি। কখনো এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। রাজনৈতিক মামলায় রাজনৈতিক নেতারা আসামি হচ্ছেন, সেখানে সাংবাদিক টেনে আনল পুলিশ।’
চকরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হক বলেন, ‘চারজন পেশাদার সাংবাদিককে আসামি করায় পুলিশের প্রতি নিন্দা প্রকাশ করছি। সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছে। ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই সাংবাদিকেরা জড়িত নয়। দ্রুত মামলা থেকে তাঁদের বাদ দেওয়ার দাবি জানাই।’
জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই সব সাংবাদিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এরপরও যদি অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ে তাঁদের সম্পৃক্ততা পাওয়া না যায়, তাহলে অভিযোগপত্রে বাদ দেওয়া হবে।
পুলিশের করা এই দুটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুছা ইবনে হোছাইন ওরফে বিপ্লবকে। এ ছাড়া খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, হারবাং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জহিরউদ্দিন মোহম্মদ বাবার, চকরিয়া পৌর জামায়াতের আমির আরিফুল কবির, সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন, জেলা জামায়াতের সদস্য হেদায়েত উল্লাহ, চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুস সালামকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় অংশ নিয়ে জামায়াত ইসলামীর নেতারা পুলিশকে ইট-পাটকেল ছুড়ে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আহত করেন। এ সময় পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আসামিরা বিভিন্ন উসকানিমূলক ও সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..