অবশেষে জানা গেল কেন বেড়েছে ডিমের দাম। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অনুসন্ধান বলছে, বিক্রেতারা পাকা রসিদ না রাখাতেই ভোক্তাকে দাম বাড়তির মাশুল গুনতে হচ্ছে। এই দুষ্ট চক্রকে থামাতে পাকা রসিদ না পেলে প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সংস্থাটি।
মাত্র ১০ দিনে ১২০ থেকে ১৬০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে কে হাতিয়ে নিলো? এমন প্রশ্ন তুলেই সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ডিমের দাম কত হওয়া উচিত, সেই আলোচনা এগিয়ে নেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, বাজারে শৃঙ্খলা না থাকার কারণে এমন পরিস্থিতি। মূলত পাকা ভাউচারের অভাবে ব্যবসায়ীরা বলছেন যে মিলে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বা ফার্মে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিংবা আড়তদারকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দোষারোপ করছেন যে আড়তদাররা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আবার খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অর্থাৎ, বাজারে এই ব্লেইম গেমগুলো চলছে।
প্রায় দুই ঘণ্টার এই আলোচনায় বেরিয়ে আসে বিক্রেতারা পাকা রসিদ না রাখাতেই অস্থির হয়ে উঠছে ডিমের বাজার। এই কারসাজি বন্ধে ১৬ আগস্ট থেকে কঠোর অবস্থানে যাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ডিমের দাম নিয়ে আলোচনা সভায় কথা বলছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। ছবি: সময় সংবাদ
এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান বলেন,
আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে হাতবদলের প্রতিটি স্তরে পাকা ভাউচার বা রসিদ বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেটি কিন্তু আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তা মেনে না চললে আমরা এখন শুধু আর কোনো প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করব না, সেই প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ করে দেব।
আলোচনায় ডিম উৎপাদনকারীরা ব্যয় বিবেচনায় খামার থেকে সাড়ে ১১টায় প্রতিপিস ডিম বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এ ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ লাভের নিশ্চয়তা চান তারা।
আলোচনায় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা খামারিরা বিক্রি রসিদ নিশ্চিত করব। কিন্তু আমাদের উৎপাদন খরচের কমে যাতে আমাদের বিক্রি করতে না হয়।’
এ সময় হিসাব কষে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ড. শাহিনুর আলম জানান, ভোক্তা পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
পরে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর নির্ধারিত দামেই ডিম বিক্রি করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাজার অস্থির করলে কেউ পার পাবে না।
তবে খামারিরা সাড়ে ১১ টাকায় বিক্রি করলে চার হাত ঘুরে কীভাবে ১২ টাকায় একটি ডিম পাবেন ভোক্তারা? আলোচনা শেষ হলেও মেলেনি এর যৌক্তিক কোনো উত্তর।
এ জাতীয় আরো খবর..