গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে রুল শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটির্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী বাপ্পী।
রায়ের পর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের এ রায়ে প্রমাণ হলো আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। তিনি নোবেল জয়ীই হোক আর যেই হোক।
এ রায়ের ফলে শ্রম আদালতে মামলাটির বিচারকাজ স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।
তবে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন কালের কণ্ঠকে বলেছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেবন তার মক্কেল।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী না করা, অর্জিত ছুটি না দেওয়া এবং কল্যাণ তহবিলে মুনাফার ৫ শতাংশ না দেওয়ার অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। টেলিকমের চেজয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনকে আসামি করা হয় মামলায়।
ইউনূস ছাড়া অন্য তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নুরজাহান বেগম, মো. আশরাফুল হাসান ও মো. শাহজাহান।
গত ৬ জুন শ্রম আইনের ৩০৩(ঙ) ও ৩০৭ ধারার অধীনে আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। পরে ১৯ জুন শ্রম আদালতের অভিযোগ গঠনের আদেশ স্থগিত ও আদেশটি বাতিল প্রশ্নে রুল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূসসহ চার আসামি। শুনানির পর গত ২৩ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির তিন পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
রাষ্ট্রপক্ষ ও মামলার বাদী কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পরে রুল জারির এ আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২৫ জুলাই শুনানির পর চেম্বার আদালত আবেদনটির শুনানির তারিখ দিয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সেই সঙ্গে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম ও হাইকোর্টের রুলে স্থিতাবস্থা দেন। এর মধ্যে হাইকোর্টের রুল জারির আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বেঞ্চ পরিবর্তন করে হাইকোর্টকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলটির শুনানি করে রায় দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশের পর গত দুইদিন রুল শুনানি করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আছে। আগামী ২২ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..