বড় ও ছোট ফেনী নদীতে ধরা পড়ছে বড় বড় ইলিশ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাছের সন্ধানে ঘুরতে থাকা জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। গত শুক্রবার দুপুরের দিকে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় স্থানীয় জেলেদের জালে ৫০টি ইলিশ ধরা পড়ে। বেশির ভাগ ইলিশের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত।
মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় জেলেরা এখন উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
শুক্রবার সকালে ইলিশ ধরতে তিনটি ট্রলার ও নৌকা নিয়ে উপজেলার আদর্শগ্রাম এলাকার মো. আবদুল খালেক, নুর নবী, আবদুল শুক্কুরসহ ১৫-২০ জেলে বড় ও ছোট ফেনী নদীর শেষ প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জাল ফেলেন। দুপুর হওয়ার পর জোয়ার কমতে থাকায় জালে টান মারলে তাঁরা বুঝতে পারেন, বড় কিছু আটকা পড়েছে। জাল টেনে নৌকায় তুলতেই সবাই দেখতে পান, বড় বড় ইলিশ ধরা পড়েছে।
এর মধ্যে ১০টির ওজন আড়াই কেজি, ২১টির ওজন ২ কেজির বেশি। এ ছাড়া ১ কেজি ১৫০ গ্রাম থেকে সাড়ে ৯০০ গ্রামের আরও ১৯টি ইলিশ একই জালে আটকা পড়ে। অপর তিনটি জালে ধরা পড়ে ছোট-বড় আরও প্রায় দুই মণ ইলিশ।
আবদুল খালেক বলেন, ‘পৌর শহরের পাইকারি মাছ বিক্রেতা আবদুল মান্নান, নেয়ামত উল্যাহসহ তিন ব্যবসায়ী যৌথভাবে তাঁদের সাড়ে ৪ মণ ইলিশ ৩ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে নেন।’
মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, মাছগুলো বিক্রি করার জন্য সন্ধ্যায় পৌর শহরের মাছবাজারে নিয়ে আসেন তাঁরা। নদীর তীরে ও বাজারে উৎসুক অনেকে বড় ইলিশগুলো দেখতে ভিড় করেন। আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ টাকা, ২ কেজির ইলিশ ২ হাজার ও ১ কেজির ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তাঁরা। সব কটি মাছ মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত বছর এ সময় বড় ও ছোট ফেনী নদীতে ইলিশ ছাড়াও কোরাল, বোয়াল, কাতলা, পাঙাশ, বাগাড়, ১০ মণ ওজনের একটি শাপলাপাতা মাছসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরা পড়েছিল বলে জানান জেলেরা। নদীর এসব মাছ সুস্বাদু। এগুলোর দামও বেশি পাওয়া যায়। তবে এ বছর এখনো তিন কেজি ওজনের ইলিশ ছাড়া অন্য বড় মাছ ধরা পড়েনি।
বাজারে কথা হয় নাজমুল হাসান নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিশ তাঁর প্রিয় মাছ। বড় ইলিশ দেখে তিনি আড়াই ও ২ কেজি ওজনের ৫টি ইলিশ ২১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে নেন। বড় মাছ দেখে বাড়ির সবাই খুব খুশি হবে বলে জানান তিনি।
নদী ও সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশবিস্তার বেড়েছে জানিয়ে উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় স্থানীয় জেলেরা উপকৃত হচ্ছেন। ফলে নদীতে টানা ও বসানো জালে এখন বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়তে শুরু করেছে। সামনে আরও বড় বড় মাছ ধরা পড়বে বলে তিনি আশা করছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..