টানা ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল। সড়কের কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন।
যাতায়াতের ক্ষেত্রে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
আজ শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টার দিকে টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই এলাকায় সড়কে কিছুক্ষণ যানচলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে ফেলে।
এরপর সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরপর বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে।
এতে করে নগরের বাকলিয়া, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, শুলকবহর, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে।
নগরের বাকলিয়া, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, শুলকবহর, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প চলমান থাকায় নগরের বেশিরভাগ এলাকার নালাগুলো দিয়ে পানি যথাযথভাবে নামতে পারে না। একারণে অল্প বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের নিয়মিত ঘটনা।
বৃষ্টিতে নগরের ষোলশহর দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুরের দিকের সড়ক, আতুরার ডিপো থেকে হামজারবাগ সিনেমা গলি, প্রবর্তক মোড়, চকবাজারের কাপাসগোলা, বাকলিয়া, রিয়াজউদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাটের কিছু অংশসহ নগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এসব এলাকার ছোট ছোট নালায় আবর্জনা আটকে থাকায় অলিগলি ছেড়ে সড়কেও পানি জমতে দেখা গেছে।
এসব এলাকার প্রধান সড়কের কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর, আবার কোথাও বুক ছুঁই ছুঁই পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়ক ডুবে যাওয়ায় যাতায়াতে ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা।
বাসায় পানি ঢুকে যাওয়ায় আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নষ্ট হচ্ছে। জ্বলছে না চুলা। বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভিজে গেছে বেশকিছু পণ্য।
২০১৭ সালের আগস্টে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। ২০২২ সালে এর ব্যয় বাড়িয়ে ৯ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা করা হয়।
নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টির কাজ করা হয় এই প্রকল্পের অধীনে। বাকি ২১টি খালে পানি যাওয়ার পথ নেই। এসব খাল এবং ৫৯টি পয়েন্টের ব্রিজ, কালভার্টে বিদ্যুৎ, ওয়াসা ও গ্যাসের লাইনে ময়লা জমে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা দপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি ধর বলেন, বাংলাদেশের ওপর এখন মৌসুমি বায়ু সক্রিয়। এ কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা আরো দুই থেকে তিনদিন এভাবে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে পারে। সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সূত্র : বাসস
এ জাতীয় আরো খবর..